এদিকে শনিবার (১৩ জুন) জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ৫৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৫০ জনে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ দিন আগে শিবচরের উত্তর বহেরাতলার সেনেরবাট এলাকার ওই ব্যক্তি ঢাকার নবাবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে খাদ্য নালীতে অপারেশন হয়। কয়েকদিন পর সে বাড়ি ফিরে আসে। বাড়িতে আসার পর সে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৪ জুন তাকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ সময় তার শ্বাসকষ্ট থাকায় ৭ জুন তার করোনাভাইরাসের নমুনা নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে, তার বাড়ি ফেরার আকুতির প্রেক্ষিতে পরিবারের সদস্যরা শনিবার সকালে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে। পরে শনিবার সকাল ১০ টার দিক তার মৃত্যু হয়। মৃতের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় অংশ নেয় শতাধিক মানুষ।
এদিকে ৭ জুনের নমুনার রিপোর্ট শনিবার দুপুর ১ টার দিকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। সেখানে ওই ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়। পরে ওই পরিবারের সকল সদস্য ও জানাজায় অংশ নেয়াদের হোম কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার পরামর্শ দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩৯টি রিপোর্ট পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত রিপোর্টের মধ্যে ৫৭ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে রাজৈর উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৩, শিবচরে ১৭, কালকিনি ১৬ ও সদর উপজেলায় একজন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পাঁচ্চর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, হাইওয়ে পুলিশের ৯ সদস্যও রয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৫০ জনে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন কোনো রোগী সুস্থ্য হবার খবর নেই। তবে, এখন পর্যন্ত জেলায় মোট সুস্থ্য হয়েছেন ১০৫জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১৮৩ জন রোগী।
মাদারীপুর থেকে ঢাকার ল্যাবে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৯৪ টি নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হলেও প্রাপ্ত রিপোর্টের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৫২ টি। তারমধ্যে ৩৫০ জনের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছেন ৫ জন। এছাড়া উপসর্গ নিয়েও মারা গেছেন অরো ৫ জন।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ জানান, তার গাড়ি চালক করোনা পজেটিভ হওয়ায় তিনি বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এ জন্য মৃত ওই ব্যক্তির বাড়িতে তিনি না গেলেও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে তার জানাজায় অংশ নেয়া সকলদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনই জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে এই ভাইরাসে অনেকেই আক্রান্ত হবেন। তাই সরকারের নির্দেশনা ও সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান করছি। এছাড়া ২০ সেকন্ড করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি।
0 coment rios: