জন্মসনদে উল্লেখ থাকা মূল জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে পাবলিক পরীক্ষা, জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা পাসপোর্ট অনুযায়ী জন্ম তারিখ পরিবর্তনের আবেদন গ্রহণ করা যাবে না। এখন থেকে নিজেদের ইচ্ছেমতো জন্ম তারিখ বসানো যাবে না।
![]() |
জন্ম সনদ ফরম। ছবি: সংগৃহীত |
সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) থেকে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে রেজিস্ট্রার জেনারেল রাশেদুল হাসানের সই করা এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা সব জেলা প্রশাসক ও সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ (সংশোধিত ২০১৩) অনুসরণে বাংলাদেশের নাগরিকদের দেশে বা বিদেশে অবস্থানরত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করা হয়। এ আইন এবং এ আইনের অধীন প্রণীত বিধিতে শিশুর জন্মের পরপর এবং ব্যক্তির মৃত্যুর পরপর মৃত্যুর খবর রেজিস্ট্রারকে দেয়া ও নিবন্ধন করানোর তাগিদ রয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘শিশুর ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদে লিখিত তারিখ তার প্রথম এবং আদি জন্ম তারিখ এবং এ তারিখের ভিত্তিতেই তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হয়ে থাকে। কিন্তু পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে যে, অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিক পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, পাসপোর্ট করার সময় জন্ম নিবন্ধন সনদে উল্লেখ করা তারিখের পরিবর্তে অন্য একটি জন্ম তারিখ বসিয়ে পাবলিক পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন, পাবলিক পরীক্ষার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরি করা হয়।’
‘পাবলিক পরীক্ষার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের আদলে জন্মসনদ বিশেষ করে জন্ম তারিখ সংশোধন করে দেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করা হয়। নিবন্ধক অফিস এসব আবেদন গ্রহণ করে থাকে, আপলোড করে এবং অনুমোদনের জন্যও পাঠানো হয়। ইহা সমীচীন নয়,’ বলা হয় চিঠিতে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ‘কোনো নিবন্ধক অফিসে জন্মসনদের মূল জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে পাবলিক পরীক্ষা, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট তৈরি করে জন্ম তারিখ বা জন্ম সাল পরিবর্তনের আবেদন যেন গ্রহণ না করা হয়, আপলোড না করা হয় এবং অনুমোদনের জন্য যেন পাঠানো না হয়, সেই অনুরোধ করা হলো।’ এ ধরনের আবেদন মোটেও অনুমোদনযোগ্য নয়। বিষয়টি অধিক্ষেত্রের সব নিবন্ধন অফিসকে জানিয়ে দেয়ার জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাশেদুল হাসান বলেন, অনেকেই এনআইডি-পাসপোর্ট করার সময় বলে তার জন্ম নিবন্ধন হয়নি। পাবলিক পরিক্ষার সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রেও অনেক সময় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জন্মতারিখ বসায়। পরবর্তীতে আমাদের কাছে এসে বলে ছোট ভুল হয়েছে, সে অনুযায়ী ঠিক করে দেয়ার অনুরোধ করে। সংশোধনের ক্ষেত্রে নাম ভুল হতে পারে বা টাইপিং মিসটেক হতে পারে; সেগুলো করা যেতে পারে। কিন্তু জন্ম তারিখ নিয়ে মূলত আমাদের কনসার্ন।
তিনি বলেন, ‘অনেকের জন্মসাল ১৯৮৫ হলে এসে বলে ১৯৮৯ করে দেন। এগুলো কি সম্ভব? তাই জন্ম নিবন্ধন যদি আগে হয়ে থাকে, পরবর্তীগুলো যদি বিকৃত হয়ে থাকে, সেগুলো আমরা সংশোধন করব না। জন্মনিবন্ধন বিকৃত করে পরে আবার এসে আমাদের কাছে কারেকশন চাইবে, সেটি আমরা দেবো না।’
0 coment rios: